Categories
জেলা

ঝাড়েশ্বর মন্দিরে শিবের ব্রত পালন করলে মেলে রোগ মুক্তি, সন্তান সুখ! এই মন্দিরের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর :- 

মেদিনীপুর থেকে আনন্দপুরের দূরত্ব ২৫ কিমি। ৩৫০ বছরের পুরনো ঝাড়েশ্বর শিব মন্দিরটি পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুরের কানাশোল গ্রামে অবস্থিত। যার ঠিক পাশেই রয়েছে ১৪ একরের বিশাল দিঘী। ভক্তরা দীঘিতে ডুব দিয়ে স্নান করে সেই দীঘির জল নিয়ে শিবের মাথায় ঢেলে দেন।

কথিত আছে যে, মন্দিরটি আজ যেখানে রয়েছে সেখানে একসময় বন ও বটগাছ ছিল। তার নিচে মাটিতে প্রোথিত অবস্থায় ছিল শিবলিঙ্গ। একটি কালো গাভী প্রতিদিন সেই স্থানে দুধ ঢালত। একদিন এক রাখাল ছেলে এই দৃশ্য দেখতে পায়। সেই রাতেই গরুর মালিক ব্রাহ্মণভূমের রাজা আলাল নাথ দেব এবং আড়িয়াদের পুরোহিত শীতলানন্দ মিশ্র স্বপ্ন দেখেন। যে স্থানে কালো গাভী দুধ দিত, সেখানে খনন করে শিবলিঙ্গ উদ্ধার করা হয়। এই শিবলিঙ্গটি ১৬২৯ খ্রিস্টাব্দে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নাম দেওয়া হয়েছিল ঝাড়েশ্বর শিব।

ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরে শিবের ব্রত পালন করলে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিঃসন্তান মায়ের কোলে সন্তান আসে। আর, এই সব কারণে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ভক্তরা ঝাড়েশ্বর শিবের মাথায় জল ঢালতে আসেন। পরে এই মন্দিরটি চারবার সংস্কার করা হয়।

১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম সংস্কার করা হয়েছিল। এরপর ১৯৩০, ১৯৬০ এবং ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে সংস্কার করা হয়। ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে নাড়াজোলের রাজা অযোধ্যা রাম খানের দেওয়ান রাম নারায়ণ জানা ঝাড়েশ্বর শিবের কাছে মানত করেন এবং তিনি গুরুতর শূল রোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন। এই ঘটনার পর এই মন্দিরের খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

রাজা আলাল নাথ দেব বিশাল দিঘী খনন করেন যা ৬৭ ফুট উঁচু এই মন্দিরের পাশে অবস্থিত। তাই এই দীঘিটি আলাল দীঘি নামেও পরিচিত।