Categories
সাহিত্য আড্ডা

আন্তঃবিদ্যালয় একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করলো বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়

বেঙ্গল সমাচার প্রতিবেদন,মেদিনীপুর, ২৯ শে জুলাই

বঙ্গ রঙ্গমঞ্চের দেড়শো বছর উদযাপন কমিটির উদ্যোগে সম্প্রতি মেদিনীপুর শহরে অনুষ্ঠিত হলো আন্তঃ বিদ্যালয় একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতা। চারদিন ধরে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় মেদিনীপুর শহরের মোট সাতটি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অংশ গ্রহণ করে। নাটক প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয় , ইংরেজি মাধ্যম উচ্চ-বিদ্যালয় রয়্যাল অ্যাকাডেমি এবং বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ(বালক)। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছে রয়েল একাডেমীর ছাত্র অনিরূদ্ধ মজুমদার। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন নারায়ণ বিদ্যাভবন বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাগরিকা সিং। শ্রেষ্ঠ সহ অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী তিয়াশ চক্রবর্তী। সেরা সহ অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের ছাত্র রাহুল ভকত।শ্রেষ্ঠ পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষাকা শ্রাবনী মিদ্যা ও মৌ বর্মণ। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব অমিয় পাল, শেলি মন্ডল ও সিদ্ধার্থ সাঁতরা।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার কাউন্সিলর সৌরভ বসু, রয়েল একাডেমির অধ্যক্ষ সত্যব্রত দোলাই, বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, প্রধান শিক্ষিকা স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজকর্মী প্রসেনজিৎ সাহা প্রমূখ l  উৎসব কমিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দুলাল আঢ্য, রবিশঙ্কর বসু, বিপ্লব ভট্টাচার্য্য, আলোকবরণ মাইতি সহ অন্যান্যরা।

প্রততিযোগিতার নাটক বাদেও দুটি আমন্ত্রণ মূলক নাটক মঞ্চস্থ হয়। “একটি অবাস্তব গল্প” নাটকটি মঞ্চস্থ করেন বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা আর “ভাড়াটে চাই” নাটকটি মঞ্চস্থ করেন কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।

প্রতিযোগীদের উৎসাহিত করতে নাটকের দিনগুলোতে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক ডাঃ বি বি মন্ডল, অধ্যাপক সত্যরঞ্জন ঘোষ সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।সূচনার দিন অন্যান্য অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার সূচনা করেন প্রবীণ নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রতীক দে।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া মহাবিদ্যালয়ের উদ্যোগে লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে একদিবসীয় আলোচনাচক্র 

নিজস্ব প্রতিনিধি,পালপাড়া:-

পূর্ব মেদিনীপুরের যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে একদিবসীয় আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হল। সহযোগিতায় আই.কিউ.এ.সি l  আলোচনার বিষয় ছিল ‘লিটল ম্যাগাজিন ও বাংলা সাহিত্য’। প্রধান বক্তা ছিলেন কবি, জ্বলদর্চি পত্রিকার সম্পাদক ঋত্বিক ত্রিপাঠী। চারাগাছে জল সিঞ্চন করে সেমিনারের সূচনা করেন অতিথিবৃন্দ।

ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. প্রদীপ্তকুমার মিশ্র, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মৃণালকান্তি দাস, অধ্যাপিকা শ্রীমতী পণ্ডিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপিকা পারমিতা গাঙ্গুলি, বিএড বিভাগের অধ্যাপক শেখ মনিরুল ইসলাম প্রমুখ। এঁদের আলোচনাতেও উঠে এল লিটল ম্যাগাজিনের ত্যাগ ও নিষ্ঠা, সামাজিক দায়বোধের কথা।

কাকে বলে লিটল ম্যাগাজিন! সংবাদপত্র ও সাধারণ পত্রপত্রিকার সঙ্গে লিটল ম্যাগাজিনের পার্থক্য কোথায়! লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের নামে কী কী দাবি উঠে আসে! সৎ ও সঠিক সাহিত্যের সন্ধান ও প্রচার-প্রসারে লিটল ম্যাগাজিনের ভূমিকা কী! বর্তমান লিটল ম্যাগাজিন কি তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে! ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ উঠে এলো ঋত্বিকবাবুর বক্তব্যে। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে ছাত্রছাত্রীরাও সক্রিয় অংশ নেয়। ছাত্রছাত্রীরাও একটি লিটল ম্যাগাজিন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে।

এদিনের সেমিনারে ‘বিন্দুতে সিন্ধু: প্রসঙ্গ বাংলা লিটল ম্যাগাজিন’ নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশ পায়, যেখানে লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে কলম ধরেছেন মৃণালকান্তি দাস, শ্রীমতী পণ্ডিত, ঋত্বিক ত্রিপাঠী,সুমনা পাল মণ্ডল, সুশান্ত বেরা, শুভব্রত মাইতি প্রমুখ। বাংলা বিভাগের দেওয়াল পত্রিকা ‘নিপ্পন’ প্রকাশ করেন ঋত্বিক ত্রিপাঠী।

অধ্যক্ষ প্রদীপ্তকুমার মিশ্র তাঁর বক্তব্যে এই ধরনের সেমিনারের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সেমিনারে এই ধরনের নতুন বিষয় নির্বাচন করায় বাংলা বিভাগের সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

চন্দননগরে অনুষ্ঠিত হলো সারাদিন ব্যপী শ্রুতিনাটক উৎসব

নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দননগর :-

হুগলি জেলার চন্দননগরে জ্যোতিরিন্দ্র সভাগৃহে “চুঁচুড়া মুকুর শ্রুতিনাটক গোষ্ঠী” ব্যবস্থাপনায়  সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো শ্রুতিনাট্য উৎসব।বাংলার ১০টি জেলার প্রতিনিধি দল নিয়ে গঠিত শ্রুতি নাটকের রাজ্য সমন্বয় মঞ্চের এটি ছিল নবম অধিবেশন। ইতিপূর্বে আটটি অধিবেশন আটটি জেলায় সংঘটিত হয়েছে। নবম অধিবেশন হুগলি জেলায় “মুকুর”-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজ্য সমন্বয় মঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক তথা মুকুরের প্রধান কর্নধার নাট্যকার জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী বলেন, “শ্রুতিনাটককে আরো বেশি জনপ্রিয় করে তোলার উদ্দেশ্যেই আমাদের এই ফোরাম কাজ করে চলেছে”।

এই অনুষ্ঠানে প্রতিটি জেলার বিভিন্ন নাট্যগোষ্ঠী নাটক নজর কাড়ে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দুটি প্রযোজনা ছিলো জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী রচিত ও পরিচালিত নাটক “গুড টাচ,ব্যাড টাচ” ও কবিতা কোলাজ “বন্ধ্যা সমাজ শোনো”। বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থায় অন্ধকার দিকগুলোর উপর আলোকপাত করে উত্তরণের রাস্তা খোঁজাই ছিল এই নাটগুলির বিষয়বস্তুর মূল উদ্দেশ্য। মুকুরের প্রতিটি সদস্যের নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের ফসল হলো এই দুটি প্রযোজনা।এদিনের উৎসবে উপস্থিত ছিলো পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা, বাঁকুড়া সহ আন্যান্য জেলার শ্রুতিনাটকের দল গুলো।

এই অনুষ্ঠানে নাট্যকার জ্যোতির্ময় চক্রবর্তীর তৃতীয় শ্রুতিনাটকের ব‌ই “এক মলাটে এগারো টি শ্রুতিনাটক”-এর উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট দুই নাট্যব্যাক্তিত্ব অশোক মুখোপাধ্যায় ও সত্যপ্রিয় সরকার।এই অনুষ্ঠানে দুর্গাপুর শ্রুতিরঙ্গমের ছোটদের উপস্থাপনা ও উত্তরপাড়া কাব্যস্পন্দনে পরিবেশনা উপস্থিত সকলের বিশেষ নজর কাড়ে।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

বাচিক”-এর বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর :-

মেদিনীপুর শহরের আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটক প্রশিক্ষণ সংস্থা “বাচিক” এর বার্ষিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো মেদিনীপুরের ঐতিহ্যবাহী সভাগৃহ বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে। অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান সংস্থার কর্ণাধার স্বাগতা পান্ডে।২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার প্রতি বছরের বার্ষিক অনুষ্ঠানে একজন বিখ্যাত কবি উপস্থিত থাকেন। এই বছর উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও ছড়াকার দেবব্রত দত্ত।তাঁকে বিশেষ ভাবে সম্মানিত করা হয়।

এছাড়া এদিনে বাচিকের পক্ষ থেকে “কোভিড যোদ্ধা” হিসেবে সম্মানিত করা হয় মহামারীর সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ প্রবোধ পঞ্চধ্যায়ীকে। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় মেদিনীপুর পূরসভার পৌর প্রধান সৌমেন খান, রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ড.বিবেকানন্দ চক্রবর্তী,রাজ্যের উপ স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ রবীন্দ্রনাথ প্রধানকে। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বছরের অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাচিক কর্ণধার স্বাগতা পাণ্ডের সিডি উদ্বোধন। “ইচ্ছে ছিল”এই শিরোনামের সিডিটি তে বিশিষ্ট কবি শুভ দাসগুপ্তের একটি কবিতা ও স্বাগতা পাণ্ডের নিজের লেখা তিনটি কবিতা রয়েছে । এখনো পর্যন্ত স্বাগতা পাণ্ডের মোট ১২ টি সিডি রিলিজ হয়েছে। প্রতিটি সিডিই কলকাতা থেকে রেকর্ডিং কর হয় ঐক্যতান স্টুডিও থেকে কল্যাণ সেন বরাটের পরিচালনাতে নয়তো ধুন স্টুডিও থেকে বিশিষ্ট কবি শুভ দাশগুপ্তর পরিচালনাতে। নবতম সিডি “ইচ্ছে ছিল” ধুন স্টুডিও থেকে শুভ দাসগুপ্ত পরিচালনাতে রেকর্ড করা।

অনুষ্ঠানে বাচিকের শিক্ষার্থীরা আবৃত্তি,সঙ্গীত,নৃত্যের মাধ্যমে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপিত করে।এছাড়া ছিল বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী দেবারতি মুখার্জির নৃত্য পরিবেশন। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী অর্ণব সেনেরগান। অনুষ্ঠানের আবহ সঙ্গীত রচনা করেন সুনন্দন ভট্টাচার্য ও সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মৈথিলী ঘোষ। এদিনের অনুষ্ঠানে সংস্থার ছাত্রী বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সোমা রায় কবি দেবব্রত দত্ত ও ডাঃ প্রবোধ পঞ্চাধ্যায়ীর ওয়েল পেন্টিং এঁকে উপহার দেন ওঁদের। অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান স্বাগতা পান্ডে।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

মানুষকে সাহিত্যিমুখী করতে মেদিনীপুর লিটারারি মিট! উদ্যোক্তা মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর : 

মানুষকে সাহিত্যিমুখী করতে মেদিনীপুর লিটারারি মিট! উদ্যোক্তা মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা। মোবাইল ও ডিজিটাল যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রন্থ, সাহিত্য, প্রবন্ধ এমনকি ছড়ার বই। আর সেই বই হারানোই আক্ষেপ মেদিনীপুরের তরুণ কবি সাহিত্যিক প্রাবন্ধিক এবং লেখক গ্রন্থকারদের। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেরে উঠতে পারছে না। তাই প্রত্যেকেই বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে আবদ্ধ করে নিয়েছে। কারণ ১৯৮০- ৯০ দশকের যেভাবে মানুষ বই প্রবন্ধ গল্প সাহিত্য পড়তো সেভাবে আর পড়ছে না।

এখন দু মিনিটের মোবাইল দেখে নিয়েই তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন এই পড়াশোনার কার্যকারিতাকে। এই লিটারারি মিট উদ্বোধন করেন  বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়।এই অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ছিল আপনপাঠ পত্রিকা সঙ্গে আপনপাঠের নতুন গল্প সংখ্যা ২০২২ ও নতুন সমস্ত বই। এই অনুষ্ঠান এদিন মেদিনীপুর কলেজের বিবেকানন্দ হলে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে নাটকের দায়বদ্ধতা নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন বিমল চক্রবর্তী, দেবলীনা দাশগুপ্ত, জয়ন্ত চক্রবর্তী, পার্থ মুখোপাধ্যায় অপরদিকে কবিতার পাঠকেরা ও কবি কি সেই নিয়ে বক্তব্য রাখেন মৃদুল দাশগুপ্ত, অংশুমান কর, সেলিম মল্লিক, গৌতম ভট্টাচার্যরা। এছাড়াও মেদিনীপুরের সাহিত্যচর্চা নিয়ে বক্তব্য রাখেন মৃণাল শতপথি।

এদিন তরুণ কবিদের অন্যতম উদ্যোক্তা অভিনন্দন মুখোপাধ্যায় বলেন “সাহিত্য থেকে মানুষ ক্রমশ আলাদা হয়ে পড়ছে এই মোবাইল ও ডিজিটাল যুগে।তাই মানুষকে একটু সাহিত্যমুখী করতেই এই প্রচেষ্টা। সাধারণত এই ধরনের লিটারারি মিট বড় শহর এবং রাজধানী এলাকায় হয়ে থাকে কিন্তু এ মফসল মেদিনীপুর এলাকায় এ ধরনের মিট হওয়া খুবই সৌভাগ্যজনক। আমরা চাই মানুষ মোবাইল ফেলে একটু সাহিত্য গল্প প্রাবন্ধিক হয়ে উঠুক”।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

প্রাচীন গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে মানবজাতি এবং পৃথিবীর প্রথম নারী সৃষ্টির গল্প, যা যুগে যুগে অমর হয়ে আছে

বেঙ্গল সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক :-

গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী বিশ্বের সেরা পুরাণগুলির মধ্যে একটি। যেটিতে যুদ্ধ, বীরত্ব, প্রেম, ঈর্ষা ইত্যাদি সম্পর্কিত বহু দেব-দেবীর বিশেষ চরিত্র নিয়ে অনেক রোমাঞ্চকর গল্প রয়েছে। এ ধরনের গল্পের মধ্যে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর একটি হল প্রথম নারী সৃষ্টির গল্প। কারণ, এটি জিউস এবং তাঁর পিতা ক্রোনাসের মধ্যে যুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। কিন্তু জিউস কেন তাঁর পিতা ক্রোনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন? গ্রীকরা বিশ্বাস করত যে, মানুষই মহাবিশ্বের কেন্দ্র এবং বিশ্বাস করত না যে, দেবতারা মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। তারা বিশ্বাস করত যে, মহাবিশ্ব দেবতাদের সৃষ্টি করেছে এবং দেবতাদের সৃষ্টির বহু আগে স্বর্গ ও নরক সৃষ্টি হয়েছে। টাইটানরা ছিলেন এই মহাবিশ্বের আদি দেবতা। আর এই দেবতারা তাঁদের সন্তান।

টাইটানরা সমগ্র মহাবিশ্বের সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তাঁদের ক্ষমতা ছিল অপরিসীম। তাঁরা সংখ্যায় ছিলেন অসংখ্য। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন টাইটানদের শাসক ‘ক্রোনাস’। যিনি পরবর্তীতে তাঁর পুত্র ‘জিউস’-এর কাছে পরাজিত হন। এরপর জিউস সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী হন। টাইটানদের উত্তরসূরি হিসাবে পরিচিত দেবতাদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন অন্যতম। তাঁরা পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান অলিম্পাসে বাস করতেন। অলিম্পাসে বসবাস করার জন্য তাঁদের সবাইকে অলিম্পীয় বলা হত। প্রাচীন সূত্র অনুসারে, ক্রোনাস ছিলেন ইউরেনাসের পুত্র। ইউরেনাস খুব খারাপ শাসক ছিলেন। এই কারণেই ক্রোনাস তাঁর মায়ের নির্দেশে তাঁর পিতা ইউরেনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। কারণ ইউরেনাস তাঁর সন্তানদের স্ত্রীর কাছ থেকে দূরে রেখেছিলেন। এ কারণে ক্রোনাসের মা ক্রুদ্ধ হয়ে ক্রোনাসকে তাঁর বাবাকে সিংহাসনচ্যুত করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশে ক্রোনাস তাঁর পিতা ইউরেনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। সেই নির্দেশে ক্রোনাস তাঁর পিতা ইউরেনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন।

এদিকে, ক্রোনাস যেমন তাঁর পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, তেমনি ক্রোনাসের পুত্র জিউসও তাঁর পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। কারণ ক্রোনাসও তাঁর পিতা ইউরেনাসের মতো খুবই খারাপ শাসক ছিলেন। তিনি এতটাই খারাপ ছিলেন যে তিনি তাঁর নিজের সন্তানদের হত্যা করেছিলেন। কারণ তিনি জানতে পেরেছিলেন যে তাঁর পুত্ররাই তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করবে। কিন্তু জিউসের মা রিয়া ক্রোনাসের হাত থেকে জিউসকে বাঁচাতে সক্ষম হন। আর তাই রিয়া জিউসকে ক্রোনাসকে সিংহাসনচ্যুত করার নির্দেশ দেন। জিউস তাঁর মায়ের আদেশ পালন করার জন্য তাঁর পিতা ক্রোনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। জিউস এবং ক্রোনাসের মধ্যে একটি ভয়ানক যুদ্ধ শুরু হয়।

টাইটানরা ক্রোনাসের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল এবং পাঁচ ভাই-বোন জিউসের পক্ষে লড়াই করেছিল। এমনকি টাইটান আইপেটাসের পুত্র প্রমিথিউসও জিউসের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। প্রমিথিউসের বুদ্ধি ছিল খুবই তীক্ষ্ণ। জিউস শতাধিক দানবকে মুক্ত করেছিলেন। তারা জিউসের পক্ষে তাদের অস্ত্র বজ্রপাত, ভূমিকম্প ইত্যাদি নিয়ে যুদ্ধ করেছিল। অবশেষে জিউস তাঁর অসীম শক্তি ও প্রজ্ঞার কারণে যুদ্ধে জয়ী হন। জিউস এবং ক্রোনাসের মধ্যে এই ভয়ানক যুদ্ধে সমগ্র মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। কারণ ধরিত্রীদেবী টাইফন নামের এক ভয়ঙ্কর সন্তানের জন্ম দেন। যাকে জিউস তাঁর বজ্র ও বিদ্যুৎ দিয়ে পরাজিত করেছিলেন। তারপর দৈত্যরা বিদ্রোহ শুরু করে। কিন্তু ততদিনে দেবতারা খুব শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। ফলে জায়ান্টদের পরাজিত হতে হয়েছিল।

এরপরে, জিউস এবং তাঁর ভাই বোনেরা এই মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুর একমাত্র শাসক হয়েছিলেন। তখন পৃথিবী মানুষের বসবাসের উপযোগী ছিল। তখন পৃথিবীতে ভয় পাওয়ার মতো কোনো টাইটান বা দানব ছিল না। পৃথিবী একটি গোলাকার চাকতির মতো ছিল, সমুদ্র দ্বারা দুটি সমান অংশে বিভক্ত। তারপর দেবতারা মানবজাতিকে সৃষ্টি করলেন। এখানে মনুষ্য মানে শুধু পুরুষ। তাঁরা প্রথমে সোনার প্রজাতি তৈরি করেন। তারা সমস্ত শ্রম ও কষ্ট থেকে দূরে ছিল এবং প্রচুর শস্য ও ফসল ছিল তাদের। তারা প্রচুর পশুপালনও করত। কিন্তু তারা ছিল মরণশীল। তারা দেবতাদের খুব প্রিয় ছিল।

ধীরে ধীরে তাঁরা রূপা দিয়ে মানবজাতি সৃষ্টি করেন। কিন্তু তাদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তা খুবই কম থাকায় তারা নিজেরা নিজেদেরকে আঘাত করে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। এরপরে আসে তামার প্রজাতি। তারা খুব শক্তিশালী এবং খুব ভয়ঙ্কর ছিল, যা তাদের নিজেদের ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরপর পৃথিবীতে এসেছে দেবতার মতো বীর। তারা অনেক গৌরবময় যুদ্ধ এবং অ্যাডভেঞ্চারে নিযুক্ত ছিল। স্বর্গের মতো একটি দ্বীপে তাদের স্থায়ী বসবাস ছিল। অবশেষে তাঁরা লোহার প্রজাতি তৈরি করেন। যারা বর্তমানে এই পৃথিবীতে বসবাস করছে।

প্রমিথিউস এই মানবজাতি অর্থাৎ পুরুষদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ছিলেন। তিনি তাদের প্রতি এতই উদার ছিলেন যে তিনি তাদের জন্য সূর্য থেকে আগুন চুরি করেছিলেন। তবে এখানেই শেষ হয়নি, তিনি ব্যবস্থা করেছিলেন দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া পশুর সেরা অংশটি যেন পুরুষদের এবং নিকৃষ্ট অংশটি দেবতাদের দেওয়া হয়। যখন দেবতাদের উদ্দেশ্যে ষাঁড় বলি দেওয়া হয় তখন তিনি তাঁর চাদরে সবচেয়ে ভালো অংশটি লুকিয়ে রাখেন এবং হাড়গুলিকে একটি স্তূপে সাজিয়ে উজ্জ্বল চর্বি দিয়ে ঢেকে দেন। তারপর জিউসকে দুটি অংশের মধ্যে বেছে নিতে বললেন। জিউস সেই চর্বিযুক্ত অংশ পছন্দ করেন। জিউস তখন দেখলেন যে জায়গাটা শুধু চর্বি দিয়ে ঢাকা হাড়ের স্তূপ। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না। কারণ জিউস নিজেই এটি বেছে নিয়েছিলেন।

এই ঘটনাটি জিউসের কাছে খুবই অপমানজনক ছিল। এর ফলে তিনি প্রমিথিউসের উপর ক্রুদ্ধ হন এবং প্রমিথিউসের প্রিয় মানবজাতির উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জিউস পুরুষ জাতিতে অমঙ্গল আনতে প্যান্ডোরা নামে এক মহিলাকে তৈরি করেছিলেন। যিনি ছিলেন এই পৃথিবীর প্রথম নারী। যার অর্থ সকলের উপহারের সমন্বয় সাধন। কারণ এই নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং সাজানো হয়েছিল সব দেবতাদের দেওয়া উপহার দিয়ে। দেবতা ও মানুষের মন তাঁর রূপ দেখে মুগ্ধ হয়। এইভাবে প্রথম নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছিল, শুধুমাত্র পুরুষদের মধ্যে অমঙ্গল সৃষ্টি করার জন্য।

এই নারীর এই পৃথিবীতে পুরুষদের জন্য অমঙ্গল নিয়ে আসার প্রমাণস্বরূপ একটি বাক্স সে পৃথিবীতে নিয়ে আসে যা তাকে দেবতাদের দ্বারা উপস্থাপন করা হয়েছিল। এই বাক্সে সমস্ত অশুভ বিষয়বস্তু ছিল। তাই দেবতারা প্যান্ডোরাকে বাক্সটি খুলতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাকে এমনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছিল যে নিষিদ্ধ সবকিছুর প্রতি তার ব্যাপক কৌতূহল থাকবে। যাই হোক, প্যান্ডোরাকে এই উপহার বাক্সের সাথে প্রমিথিউসের ভাই এপিমিথিউসের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রমিথিউস এপিমিথিউসকে বুঝিয়েছিলেন দেবতাদের কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে। তবুও তিনি প্যানডোরাকে গ্রহণ করলেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারলেন ভাইয়ের উপদেশ মেনে চললে কতটা উপকার হতো। প্যান্ডোরা এপিমিথিউসের সাথে বাক্সটি খুলল। বাক্সটি খোলার সাথে সাথে মানবজাতির জন্য সমস্ত মহামারী, সীমাহীন দুঃখ এবং ক্ষতি বেরিয়ে আসে। প্যানডোরা দ্রুত ঢাকনা বন্ধ করে দেয় কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে সেখানে একটা ভালো জিনিসও ছিল আর সেটা হল ‘আশা’। অনেক অশুভের মধ্যে এটি একটি শুভ। আজও এটি তার সমস্ত দুঃখ-কষ্টে মানবজাতির জন্য সান্ত্বনা হিসাবে রয়ে গেছে। প্রধানত জিউসের সাথে প্রমিথিউসের চুক্তির কারণে পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। যদিও জিউস টাইটানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁর অবদানের জন্য প্রমিথিউসের কাছে কৃতজ্ঞ ছিলেন, জিউসের উপর তাঁর কৌশলের কারণে জিউস তাঁর অবদানের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। জিউস শুধু প্রমিথিউসের প্রিয় মানবজাতির জীবনে অমঙ্গলই ডেকে আনেননি, তিনি প্রমিথিউসকে ককেশাসে বন্দীও করেছিলেন।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

এক রাত কাটিয়েছিলেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! সেই শয্যাগৃহকে লক্ষ টাকা খরচ করে রবীন্দ্র অনুরাগীদের জন্য মিউজিয়াম করতে চলেছে কৈবল্যদায়িনি কলেজ

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর : 

এক রাত কাটিয়েছিলেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! সেই শয্যাগৃহ কে লক্ষ টাকা খরচ করে রবীন্দ্র অনুরাগীদের জন্য মিউজিয়াম করতে চলেছে কৈবল্যদায়িনি কলেজ। বিপ্লবী শহর মেদিনীপুরে শুধু বিপ্লবীদের জন্মস্থল বা কর্মস্থল ছিল তা নয় তারই সঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের প্রচুর কার্যকারিতা ও বিচরণ ক্ষেত্র ছিল এই বাংলা ভূমিতে। আর তাই এই জেলার বিভিন্ন জায়গায় তার ছাপ রয়ে গিয়েছে। ঠিক যেমন মেদিনীপুর শহরের কৈবল্যদায়িনি কলেজ ওরফে কেডি কলেজেও রবীন্দ্রনাথের চিহ্ন রয়ে গেছে বহু যুগ ধরে। আর সেই চিহ্নকেই এবার মিউজিয়ামের রূপান্তরিত করতে চলেছে এই কলেজ কর্তৃপক্ষ। যদিও ঘটনা ক্রমে বলা যায় ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলার ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের ৩০ সে অগ্রহায়নে অবিভক্ত মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর হল উন্মোচন করতে এসেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

শুধু নিজে এসেছিলেন তা নয় তার সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন সময়ে একাধিক বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী ও বিখ্যাত মানুষজন। এ বিদ্যাসাগর হল উন্মোচনের পরেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যান এই কেডি কলেজ অফ কমার্সে। যদিও সেই সময় এই কলেজ নামকরণ ঘটেনি। তবে এই কলেজের একটি রুমে রবীন্দ্রনাথ কবিগুরু নিজের সঙ্গীদের নিয়ে রাত্রি নিবাস করেন।তাছাড়া এই রুমের চেয়ারে বসে তিনি আলাপচারিতা সারেন নিজেদের প্রিয়জনদের সঙ্গে। এরপর জল গড়িয়েছে বহুদূর। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুই। আস্তে আস্তে এই রামগড়ের রাজার দেওয়া এই ভবনের রূপান্তরিত হয় কেডি কলেজ অফ কমার্সে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের সেই বিচরণ ভূমি তথা এই শয্যাগৃহটি আজও রয়ে গেছে সেরকমই। পরবর্তীকালে যত জন এই কলেজের অধ্যক্ষ এসেছেন তারা চেষ্টা করেছেন এই রুমের মহত্ব বুঝতে এবং বোঝাতে। কিন্তু কলেজের আয়তন ও জায়গা কম থাকায় রুমটিকে কোন ভাবে আলাদাভাবে সাজাতে পারেননি কোনও অধ্যক্ষই। কিন্তু বর্তমানের কলেজ অধ্যক্ষ দুলাল চন্দ্র দাস এই রুমটিকে মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করেতে চলেছেন সম্প্রতি।

কলেজ সূত্র অনুযায়ী তৎকালীন সময়ে কবিগুরুর বহু চর্চিত এবং ব্যবহার ব্যবহৃত জিনিস রয়েছে। রয়েছে কবিগুরুর ছোটবেলা থেকে বড়বেলার ভিন্ন ভিন্ন চিত্র ছবি। তাছাড়া রয়েছে তৎকালীন সময়ের কাগজ বহু নিদর্শন,কবিগুরুর ব্যবহৃত চেয়ার প্রভৃতি। আর সেই সব তথ্য ও তত্ত্ব নিয়েই এই মিউজিয়াম করতে চলেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। যাতে শুধু কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নয় যারা কবিগুরুর অনুরাগী,যারা কবিগুরুকে ভালোবাসেন তারা যাতে কবি গুরুর তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এবং সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন তাই জন্যই এই মিউজিয়াম তৈরি। শুধু তাই নয়,জেলা ও রাজ্যের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের পড়ুয়ারাও যাতে কবি গুরুর ব্যবহৃত জিনিস পরিদর্শন করতে সঙ্গে জানতে এবং শিখতে এই মিউজিয়ামে আসেন তারই ব্যবস্থা করতে চলেছে এই কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরই সঙ্গে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে ও অনলাইনের মাধ্যমেও পেজ খুলে সে কবিগুরুর বহু নিদর্শন তুলে ধরতে চাইছে এই কলেজের বর্তমান কর্তৃপক্ষরা। আর এই মিউজিয়াম হতে চলায় খুশি কলেজ কর্তৃপক্ষ সহ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা।

কলেজ পড়ুয়া সৌমনি সাহা, অন্বেষা দাস, সনাক্ত দেরা বলেন আমরা খুবই খুশি, আমরা চাই আমাদের কলেজের মান উজ্জ্বল হোক সম্মান বাড়ুক এবং রবীন্দ্র অনুরাগীরা ভিড় জমাক আমাদের মিউজিয়ামে। কলেজের স্টাফ তথা প্রাক্তনী ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহী বলেন “এই মিউজিয়ামে থাকছে রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত গ্রামোফোন, বিভিন্ন ছবি ছাপা সঙ্গে তার শয়নের আসবাবপত্র”।

কলেজ অধ্যক্ষ দুলাল চন্দ্র দাস বলেন “এই কলেজটি করতে জায়গা দান করেছেন রামগড়ের রাজা এবং সেই দানপত্রেই কলেজ এতদিন চলছিল। কলেজটির আয়তন কম থাকায় এবং জায়গা অত্যন্ত কম থাকার জন্য কবিগুরুর ব্যবহৃত রুমটি কোন ভাবে আলাদা করা যায়নি। সম্প্রতি কলেজ তার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পেয়েছে সদরের মুড়াকাটা এলাকায়।

তাই এই বাসভবনটিতে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত সমস্ত তথ্য নিয়েই মিউজিয়াম করতে চাইছি। যাতে কবিগুরুর অনুরাগী সহ পড়ুয়ারা এই তথ্য ও তত্ব সংগ্রহ করতে পারে এই মিউজিয়াম থেকে। এক্ষেত্রে শুধু কলেজ কর্তৃপক্ষ নয় কলেজের প্রাক্তনিরা উদ্যোগই হয়েছেন এর খরচ পড়তে চলেছে প্রায় লক্ষাধিক টাকা”।

 

Categories
সাহিত্য আড্ডা

আজ ১৭ই ডিসেম্বর, ইতিহাসে এই দিনে যা ঘটেছিল আসুন জেনে নিই

বেঙ্গল সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক :-

আজ ১৭ই ডিসেম্বর। একটি দিনে থাকে ২৪ ঘন্টা/ ১৪৪০ মিনিট/ ৮৬ হাজার ৪০০ সেকেন্ড। সময়ের বিচারে এটা খুবই সংক্ষিপ্ত মনে হলেও একটি ঘটনার জন্য যথেষ্ট। ইতিহাস দেখায় যে বছরের প্রতিটি দিনে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। ইতিহাসের আকর্ষণীয় এবং উল্লেখযোগ্য ঘটনা সম্পর্কে জানুন। চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ইতিহাসে এই দিনে কী ঘটেছিল, কে জন্মেছিলেন এবং কে মারা গিয়েছিলেন :-

ইতিহাস:-

১৩৯৯ – তৈমুর লং পানিপথের যুদ্ধে দিল্লির সুলতান মুহাম্মদ তুঘলককে পরাজিত করেন।

১৮৭৩ – বুদাপেস্ট নগরীর পত্তন।

১৯০৩ – রাইট ভ্রাতৃদ্বয় প্রথম বিমান উড়িয়েছিলেন। দিনটি আমেরিকায় রাইট ব্রাদার্স ডে হিসেবে পালিত হয়।

১৯৩১ – প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ কলকাতায় ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৪২ – বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠন করেন।

১৯৯৬ – পেরুর জিম্মি সংকট শুরু হয়।

জন্ম :-

১৭৭০ – জার্মান সুরকার এবং পিয়ানোবাদক লুডউইগ ভ্যান বেইটোভেন।

১৮৯২ – ভারতীয় বাঙালি সাংবাদিক বঙ্কিমচন্দ্র সেন।

১৯০২ – মালতী ঘোষাল, ভারতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী।

১৯২০ – টুরিং পুরস্কার বিজয়ী কম্পিউটার বিজ্ঞানী কেনেথ আইভারসন।

১৯৩৬ – বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক দেবেশ রায়। তিনি ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯০ সালে “তিস্তা পারের” উপন্যাসের জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। বাংলা সাহিত্যে তিনি একজন আধুনিক ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

১৯৭৯ – বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাবনূর।

১৯০০ – ব্রিটিশ গণিতবিদ মেরি কার্টরাইট।

মৃত্যু :-

১৯৩৮ – বিখ্যাত বাঙালি লেখক, সম্পাদক ও অনুবাদক চারুচন্দ্র ব্যানার্জী। তিনি ১৮৭৭ সালের ১১ই অক্টোবর অবিভক্ত বাংলার মালদহের চাঁচলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের যশোর। ‘মেঘদূত’, ‘মাঘ’ প্রভৃতি পত্রিকায় সংস্কৃত সাহিত্যের সমালোচক হিসেবে চারুচন্দ্রের সাহিত্যজীবন শুরু হয়।

১৯৬১ – শিক্ষাবিদ ও লেখক গোলাম মাকসুদ হিলালী।

২০০২ – Aidew Sandikoi, অসমীয়া চলচ্চিত্রের প্রথম মহিলা অভিনেত্রী।

২০১১ – কিম জং-ইল, গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া বা উত্তর কোরিয়ার শাসক এবং প্রধান ব্যক্তিত্ব।

মানুষ ইতিহাসের উপর নির্ভর করে। মানুষ অতীতকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যৎকে পেতে এগিয়ে যায়। আমাদের জীবনের অর্জন-বিসর্জন, জয়-পরাজয়, আবিষ্কার-উদ্ভাবন, রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজবিজ্ঞানের পথ একসময় ইতিহাসে রূপ নেয়। সেই ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য ঘটনা স্মরণে আজ একটি বিশেষ প্রতিবেদনের আয়োজন করা হল।

তথ্য :- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত…

Categories
সাহিত্য আড্ডা

মেদিনীপুরে বঙ্গ রঙ্গমঞ্চের সার্ধ শতবর্ষ উদযাপন উৎসবের সূচনা

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর :

 বুধবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে আনুষ্ঠানিক ভাবে বঙ্গ রঙ্গ মঞ্চের দেড়শো বছর পূর্তি উৎসবের সূচনা হলো। উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনার আগে এই উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা মেদিনীপুর শহর পরিক্রমা করে‌। পদযাত্রার সূচনা পর্বে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা, নাট্যব্যক্তিত্ব চন্দন সেন। পদযাত্রায় অংশ নেন মেদিনীপুরের যাত্রা, নাটক তথা সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্ট জনেরা এবং সংস্কৃতি প্রেমী ব্যক্তিবর্গ।

ঢাক,কলসী মাথায় নৃত্য,ধামসা,মাদল,ব্যান্ড, চলমান নৃত্য সহযোগে আয়োজিত এই শোভাযাত্রা বিদ্যাসাগর হল ময়দান থেকে শুরু হয়ে বটতলা,গোলকূঁয়াচক, পঞ্চুর চক গান্ধীমোড় হয়ে পুনরায় বিদ্যাসাগর হলে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে শিশির ভাদুড়ির স্মৃতিতে উৎসর্গীকৃত মঞ্চে সমবেত অতিথিদের উপস্থিতিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা চন্দন সেন। সূচনা লগ্নে অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বঙ্গ রঙ্গমঞ্চের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন নাট্য পরিচালক পার্থ মুখোপাধ্যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির কার্যকরী সভাপতি দুলাল আঢ্য, ডিসিসিআই এর সভাপতি আনন্দগোপাল মাইতি,পশ্চিম মেদিনীপুর ডিসিসিআই এর সম্পাদক চন্দন বসু,কার্যকরী সভাপতি প্রসেনজিৎ সাহা, উৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক প্রণব চক্রবর্তী ও রবি বসু , উৎসব কমিটির সভাপতি পথিক দে সহ অন্যান্যরা।

নাটকের গান পরিবেশন করেন আলোক বরণ মাইতি ও রথীন দাস। তিনটি নাট্যাংশ অভিনয় করেন নিশান,কৃষ্টি সংসদ ও সু-মু-দে স্মৃতি শিল্পী সংঘের কুশীলবরা। অনুষ্ঠানে মেদিনীপুরের প্রবীণ নাট্যশিল্পীদের সংবর্ধনা জানানো হয়। এই উৎসবকে সামনে রেখে বছরভর নাটক,কর্মশালা, সেমিনার , প্রতিযোগিতা, পত্রিকা প্রকাশ সহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

Categories
সাহিত্য আড্ডা

নেশা যখন পঞ্জিকা সংরক্ষণ! বাবার সংরক্ষণের নেশায় বুঁদ ছেলে,119 বছরের কঠোর পরিশ্রম বলছে বৃদ্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :

সংরক্ষণের নেশা অনেকেরই আছে। কারো টাকা জমানার তো কারো বই সংরক্ষণ। আবার কেউ কেউ ফুল সংরক্ষণ করতে ভালবাসে কারো কারো ক্ষেত্রে পুরানো নস্টালজিয়া কোন পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ। কিন্তু একটু অবাক হলেও এই মানুষটির সংরক্ষণের তালিকায় রয়েছে পঞ্জিকা।

মূলত এই সমাজের শাস্ত্রমতে মানুষদের জন্ম মৃত্যু বিবাহ এবং কোন শুদ্ধ কাজ করতে গেলেই পঞ্জিকা এক এবং অনবদ্য। আজও যেখানে পঞ্জিকার তিথি অনুযায়ী যেমন ছেলের বিবাহ দেওয়া হয় নামকরণ করা হয় তেমনি মারা গেলে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানেও পঞ্জিকার গুরুত্ব অপরিসীম। শাস্ত্রমতে এই পঞ্জিকা দিয়েই বহু দোষ গুণ যেমন কাটানো যায় তেমনি পঞ্জিকা মতে সূর্যগ্রহণ চন্দ্রগ্রহণ পূর্ণিমা অমাবস্যা ও পালন করে আসে এই পৃথিবীর মানুষ। তাই এই পঞ্জিকা এখন ডিজিটাল যুগে কিছুটা নিস্তেজ হয়ে গেলেও ব্যবহার কমেনি। এই পঞ্জিকা শুধু পরিবারের লোকজন নয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরোহিতরা ব্যবহার করে থাকেন। যদিও ডিজিটাল যুগে এখন অনলাইনের মাধ্যমে পঞ্জিকা দেখা হয়। তবে হাতে-কলমে এই পঞ্জিকা এখনো কিছু রয়ে গেছে।

আর সেই পঞ্জিকা সংরক্ষণের অদ্ভুত নেশায় মেদিনীপুর শহরের মির্জা বাজার গয়লাপাড়ার এলাকার ৬৯ বছরের তারা শংকর চক্রবর্তী। তারাশঙ্করবাবু পেশাগতভাবে একজন সংবাদ মাধ্যমের মানুষ। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতাই করে এসেছেন তিনি। কিন্তু তিনি ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছেন তার বাবা গণেশ চন্দ্র চক্রবর্তী তার বাড়িতে থরে থরে সাজানো পঞ্জিকা। এই পঞ্জিকা শুধু দু’বছর পাঁচ বছর আগে না এই পঞ্জিকা স্বাধীনতার আগে প্রায় ১৯০৪ সাল থেকে রয়েছে। ১৯০৪-০৬-০৭– যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ১৯৪৭৪৮ সহ স্বাধীনতার আগে এবং স্বাধীনতার পরবর্তী পঞ্জিকা। এখনো সংরক্ষণ রয়েছে সম্প্রতি বেরোনো ২০২২ সালের পঞ্জিকা। বাবার নেশা এখন ছেলের মধ্যে। তাই বয়সকে তোয়াক্কা না করেই তিনিও একই নেশায় সেই পঞ্জিকা সংরক্ষণ করে চলছেন। এবছরের পঞ্জিকা নিয়ে তার মোট ১১৯ টি পঞ্জিকা সংরক্ষণ রয়েছে।

অনেকেই এই পুরানো পঞ্জিকা সংগ্রহ করতে এবং পড়তে আসেন এই তারাশঙ্কর চক্রবর্তী বাড়িতে। বহু পুরোহিত মশায় আছেন এই পুরানো দিনের পঞ্জিকা ঘেঁটে বিভিন্ন তথ্য নিতে এই চক্রবর্তী বাড়িতে।

এইদিন  দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকার দেওয়া তারাশঙ্কর চক্রবর্তী বাবুর বক্তব্য “ছোটবেলায় দেখেছি বাবাকে এই পঞ্জিকা সংরক্ষণ করতে। তখন ছিল তালপাতার এবং এখন থেকে কিছুটা বড় এবং হাতে লেখা। পরবর্তীকালে বাবার মৃত্যুর পর আমি সেই পঞ্জিকা সংরক্ষণ করে চলেছি। শুধু নেশা বলব এটা না, তথ্য সংগ্রহ করাই মূল উদ্দেশ্য। আসলে হিন্দুসমাজে অন্যতম ঐতিহ্য হলো এই পাঁজি। তাই এই পঞ্জিকা পড়তে বহু জ্যোতিষী পুরোহিতরা যেমন আমার বাড়িতে আসেন তেমনি আসেন বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভারসিটির পড়ুয়ারা। যতদিন বেঁচে থাকবো এই পঞ্জিকা সংরক্ষণ করে যাব এই উদ্দেশ্যই আমার। এরই সঙ্গে নাতি-নাতনিদের পঞ্জিকা পড়াতে উৎসাহিত করব”।